admin

admin

প্রিয়তমাসু – তারাপদ রায়

ভানুসিংহকে – বীথি চট্টোপাধ্যায়।

অনেকদিন পর কাগজ-কলম নিয়ে বসেপ্রথম একটা চাঁদের ছবি আঁকি, সঙ্গে কিছু মেঘ। তারপর যথেষ্ট হয়নি ভেবে গোটা তিনেক পাখি,ক্রমশ একটা দেবদারু ও কয়েকটা কলাগাছ,অবশেষে অনেকগুলি ছানাসহ একটা বেড়াল,এইসব এঁকে এঁকে তবুওকাগজের নীচে চার আঙুল জায়গা বাকি থাকে :সেখানে প্রথমে লিখি,…

উলঙ্গ রাজা – নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী

সবাই দেখছে যে, রাজা উলঙ্গ, তবুওসবাই হাততালি দিচ্ছে।সবাই চেঁচিয়ে বলছে; শাবাশ, শাবাশ!কারও মনে সংস্কার, কারও ভয়;কেউ-বা নিজের বুদ্ধি অন্য মানুষের কাছে বন্ধক দিয়েছে;কেউ-বা পরান্নভোজী, কেউকৃপাপ্রার্থী, উমেদার, প্রবঞ্চক;কেউ ভাবছে, রাজবস্ত্র সত্যিই অতীব সূক্ষ্ম , চোখেপড়ছে না যদিও, তবু আছে,অন্তত থাকাটা কিছু…

কালচক্র – হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

বারেক এখনও কি রে দেখিবি না চাহিয়া,—উন্নত গগন-পরে, ব্রহ্মাণ্ড উজ্জ্বল ক’রে                উঠেছে নক্ষত্র কত নবজ্যোতি ধরিয়া।মানবে দেখায়ে পথ, চ’লেছে তড়িবৎ                প্রভাতিয়া ভবিষ্যৎ ভূমণ্ডল ভাতিয়া।হেরে সে নক্ষত্র-ভাতি, দেখ রে মানব-জাতিছুটেছে তা’দের সনে আনন্দ উত্সাহ-মনে                নিজ নিজ উন্নতির জয়পত্র বাঁধিয়া।চ’লেছে চাহিয়া দেখ,…

সকলের গান – সুভাষ মুখোপাধ্যায়

কমরেড, আজ নবযুগ আনবে না ?কুয়াশাকঠিন বাসর যে সম্মুখে |লাল উল্কিতে পরস্পরকে চেনা—দলে টানো হতবুদ্ধি ত্রিশঙ্কুকে,কমরেড, আজ নবযুগ আনবে না ? আকাশের চাঁদ দেয় বুঝি হাতছানি ?ওসব কেবল বুর্জোয়াদের মায়া—আমরা তো নই প্রজাপতি-সন্ধানী !অন্তত, আজ মাড়াই না তার ছায়া |…

অবাক কাণ্ড – সুকুমার রায়

শুন্‌ছ দাদা! ঐ যে হোথায় বদ্যি বুড়ো থাকে,সে নাকি রোজ খাবার সময় হাত দিয়ে ভাত মাখে?শুন্‌ছি নাকি খিদেও পায় সারাদিন না খেলে?চক্ষু নাকি আপনি বোজে ঘুমটি তেমন পেলে? চল্‌তে গেলে ঠ্যাং নাকি তার ভূয়েঁর পরে ঠেকে?কান দিয়ে সব শোনে নাকি?…

কাতুকুতু বুড়ো – সুকুমার রায়

আর যেখানে যাও না রে ভাই সপ্তসাগর পার,কাতুকুতু বুড়োর কাছে যেও না খবরদার!সর্বনেশে বৃদ্ধ সে ভাই যেও না তার বাড়ি—কাতুকুতুর কুলপি খেয়ে ছিঁড়বে পেটের নাড়ি।কোথায় বাড়ি কেউ জানে না, কোন্‌ সড়কের মোড়ে,একলা পেলে জোর ক’রে ভাই গল্প শোনায় প’ড়ে।বিদ্‌ঘুটে তার…

বিস্মৃতি – সমর সেন

ভুলে যাওয়া গন্ধের মতোকখনো তোমাকে মনে পড়ে।হাওয়ার ঝলকে কখনো আসে কৃষ্ণচূড়ার উদ্ধত আভাস।আর মেঘের কঠিন রেখায়আকাশের দীর্ঘশ্বাস লাগে।হলুদ রঙের চাঁদ রক্তে ম্লান হ’লো,তাই আজ পৃথিবীতে স্তব্ ধতা এলো,বৃষ্টির আগে শব্ দহীন গাছে যে-কোমল, সবুজ স্তব্ ধতা আসে।

ঝর্ণা – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা!তরলিত চন্দ্রিকা! চন্দন-বর্ণা!     অঞ্চল সিঞ্চিত গৈরিকে স্বর্ণে,     গিরি-মল্লিকা দোলে কুন্তলে কর্ণে,তনু ভরি’ যৌবন, তাপসী অপর্ণা!            ঝর্ণা!পাষাণের স্নেহধারা! তুষারের বিন্দু!ডাকে তোরে চিত-লোল উতরোল সিন্ধু|     মেঘ হানে জুঁইফুলী বৃষ্টি ও-অঙ্গে,     চুমা-চুমকীর হারে চাঁদ ঘেরে রঙ্গে,ধূলা-ভরা দ্যায় ধরা তোর লাগি ধর্ণা!            …

উত্তম ও অধম – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

কুকুর আসিয়া এমন কামড়দিল পথিকের পায়কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটেবিষ লেগে গেল তায়। ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারাবিষম ব্যথায় জাগে,মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়জাগে শিয়রের আগে। বাপেরে সে বলে র্ভৎসনা ছলেকপালে রাখিয়া হাত,তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারেতোমার কি নাই দাতঁ?…

দূরের পাল্লা – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ছিপখান তিন-দাঁড় –তিনজন মাল্লাচৌপর দিন-ভোরদ্যায় দূর-পাল্লা!         পাড়ময় ঝোপঝাড়         জঙ্গল-জঞ্জাল,         জলময় শৈবাল         পান্নার টাঁকশাল |কঞ্চির তীর-ঘরঐ-চর জাগছে,বন-হাঁস ডিম তারশ্যাওলায় ঢাকছে|         চুপ চুপ – ওই ডুব         দ্যায় পান্ কৌটি         দ্যায় ডুব টুপ টুপ         ঘোমটার বৌটি!ঝকঝক কলসীরবক্ বক্ শোন্ গোঘোমটার ফাঁক বয়মন উন্মন…