admin

admin

ফাল্গুন-অশোক বিজয় রাহা

ছিটকিনি নড়ে উপরের জানালায়,একটু কবাট ফাঁক,চুড়ির ঝিলিক একটু আলোর চিড়দুই খানি শাদা হাত :দুইটি কবাট দুই দিকে স’রে যায়গোধূলির আলো পাখা ঝাপটায় চোখে-মুখে-বুকে এসেধু-ধু হাওয়া খেলে এলোচুলে, পর্দায়। নদীর ও-পারে আকাশে আবির-ঝড়,আলতা গলেছে জলে,হাওয়া-জানালায় চোখে-মুখে কাঁপে ঝিকিমিকি আবছায়া,ধু-ধু হাওয়া এলোচুলে,—–…

সময়-অরুণ মিত্র

সময়কে নিয়ে অনেক মজা দেখা গেল।কখনও তাকে ইন্দ্রধনুর রঙে রাঙানো হল,কখনও হাসিতে উছলে তোলা হলবা চাপা কান্নায় কাঁপানো হল,কখনও-বা তাকে হৃদয়ে হৃদয়েবাজানো হল। সৌরভ বিষাদের আভা কৌতুকউজ্জ্বল পথ ধ্যানের সুষমা ধূপছায়া,কত রকম। চোখ নাক কান খুলেই রাখো,বোধহয় দৃ্শ্যের চূড়ান্তে আসা…

বিশ্বাস অবিশ্বাস-অরুণ চক্রবর্তী

বিশ্বাস নাম লিখিয়েছে তর্কের খাতায়বিশ্বাস নাম লিখিয়েছে রক্তের খাতায়বিশ্বাস নাম লিখিয়েছে মৃতুর খাতায়শ্মশানের কাছে দিনযাপনপুরনো দিনলিপিতে যা কিছু ছিল নির্বাসনরথে লংকাপথেকলেজ স্ট্রীটের সরু গলিতে অনেক ভীড় জমতো বিশ্বাসের বই কিনতেপ্রচারতরঙ্গ সব বিশ্বাসের ছবি আঁকতো আজকাল গলায় মালা দিয়ে কিছু বিশ্বাস উটপাখির…

কাশ্মীরি খেমটা-অমৃতলাল বসু

টুকটুকে তোর পা দুখানি, আলতা পরাই আয়।চটক দেখে অবাক হয়ে, থাকবি সুখে তায়।আগে করবি যতন পায়ে, শেষেতে সোনা গায়ে,পা-দুখানি ধরলে পরে, মুখের পানে চায়।সোনেলা আঙুলগুলি, অ ফুট চাঁপা কলি,তুলি করে আলতা দিলে বাহার খুলে যায়,ঘুরে ফিরে মনচোরা লুটিয়ে পড়ে পায়।

অনির্বাণ-অমিয় চক্রবর্তী

কত মানুষের ব্যথা পুঞ্জ হয়ে মেঘেআকাশে ঘনায় উদ্বেগে।গামান্তের রুদ্ধ বুকে কার কাঁদা,মর্মান্তিক কোপা মৃত্যু-বাধা,জনে জনে জলে ঝড়ে ডোবে নৌকা কত,অনশন-মাঠে আর্ত লক্ষ শত,—তাপর মেঘ উড়ে যায়,শ্রাবণ বর্ষণ রাত যেমন পোহায়।ফিরে রৌদ্র পড়ে মাঠে গ্রামে,নতুন শিশুর ঘরে নব প্রাণ উদ্যত সংগ্রামে;কারো…

কুড়মুড় চাঁদ-অভিজিৎ চক্রবর্তী

লেখার চেয়ে দেখা ভালো,সবচেয়ে ভালো বিস্ময়–এই যে তুমি কুড়মুড় কুড়মুড় মুড়ি চিবোও,অদ্ভুত শব্দ হয়ফড়িং চিবুতে গিয়ে টিকটিকিরহরিণ চিবুতে গিয়ে বাঘেরএমনই শব্দ– মুড়ির ভেতর থেকে চিৎকার ভেসে আসেফড়িংয়ের ভেতর থেকে, হরিণের ভেতর থেকেকোনোদিকেই তাকানো যায় নাপ্রতিটি দৃশ্য তার ফ্রেম থেকে বেরিয়ে…

কাক-সাযযাদ কাদির

কাক তা সে যত কালোই থাকহোক না কেন বেসুরো তার ডাকতবু কাকের মাংস খায় না কোন কাকএকের তরে অন্যে আসে ঝাঁকের পর ঝাঁকতাই তো ভাবিভুলে গিয়ে মানুষের ঝাঁকআমি হতাম যদি কাক

মধুমাছি-রবিউল হুসাইন

এখনো কথাগুলো মৌমাছি হয়ে ওড়ে প্রতিস্বরেআর অহেতুকী আগুনে তাদের পাখাদুটি পোড়েকী যে সেই তীব্র আকর্ষণ কেউ বোঝে নাঅন্ধকারেও নক্সা আঁকে সব বর্ণালী আলপনামধুরা ফুলে থাকে নিশ্চুপ নীরবে গোপনেমৌ মৌ উড়ে উড়ে ফুলে ফুলে গড়ে মধুবনেফুলপাখি মৌচাক মৌমাছি মধুগ্রাম গড়েডালে ডালে…

পথে পথে-রবিউল হুসাইন

বিধি আমার বামে থাকে বাস্তবতা ডানেসুখের ভেতর দুঃখ কষ্ট অনেকখানি টানে একটু একটু করে যখন একলা পথে চলিকেউ আসে না ধারে কাছে কোনো কুসুমকলি পথে পথে পা বাড়িয়ে যখন দূরে যাইআশেপাশে কেউ থাকে না নিরাশ অসহায় নিঃস্ব আমি হতে পারি…

এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট – রবিউল হুসাইন

মানুষেরা নাকি এক সেকেন্ডে চার ফুট হাঁটতে পারে সাধারণতবারো কোটি মানুষ আমরাআমরা সবাই একসঙ্গে হাঁটলে মোট আটচল্লিশ কোটি ফুটঅর্থাৎ ষোল কোটি গজ, তার মানেএক সেকেন্ডে প্রায় নব্বই হাজার নয় শ দশ মাইলএগিয়ে যেতে পারি স্বাধীনতা পাওয়ার পর বিশ বছর পার হয়ে গেছেঅথচ আমরা সবাই একই জায়গায় একই বিন্দুতেদাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৌড়িয়ে মরছি সব সময়এক ইঞ্চিও অগ্রসর হতে পারছি না ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুকে ভুলতে বসেছিজয় বাংলা নামক দীপ্র বজ্রনির্ঘোষ ভুলতে বসেছিসাতই মার্চের অতন্দ্র স্বাধীনতার ডাক ভুলতে বসেছিভাসানীর আস্‌সালামুআলাইকুম ভুলতে বসেছিপাকসেনা, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদেরঅমানুষিক অত্যাচারের কথা ভুলতে বসেছিআমাদের মা-বোনদেরধর্ষিত হবার কথা ভুলতে বসেছি ‘প্রতিটি বাঙালি মেয়েকে গর্ভবতী করেখাঁটি পাকিস্তানি সন্তানের জন্ম দেব’ – শুয়োরের বাচ্চাদেরসেই রক্তে-আগুন-জ্বালানো সব কথা ভুলতে বসেছিআমরা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভুলে গেছিআমরা স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা ভুলে গেছি আসলে এতো ভুলোমন নিয়েস্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না তা হলে স্বাধীনতাকে কীভাবে রক্ষা করা যায়?সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট খানিক এগিয়ে গেলেইএকে রক্ষা করা যায় আসুন স্বাধীনতা যুদ্ধকে বুকের মাঝখানে রেখে তাই একসঙ্গেআমরা সবাই এক সেকেন্ডে চার ফুট পথ এগিয়ে যাই বন্ধুগণ এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট খুব বেশি কিছু নয়।