কবিতার খাতা
- 7 mins
গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল -নির্মলেন্দু গুণ।
গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল
আমাদের চারিধারে,
দেয়ালের মতো অনুভূতিমাখা মোম
জ্বালিয়ে জ্বালিয়ে আমরা দেখেছি
শিখার ভিতরে মুখ ।
গতকাল ছিল জীবনের কিছু
মরণের মতো সুখ ।
গতকাল বড়ো যৌবন ছিল
শরীরে শরীর ঢালা,
ফুলের বাগান ঢেকে রেখেছিল
উদাসীন গাছপালা ।
আমরা দু’জনে মাটি খুঁড়ে-খুঁড়ে
লুকিয়েছিলাম প্রেম,
গতকাল বড় ছেলেবেলা ছিল
বুঝিনি কী হারালাম !
গতকাল বড়ো এলোমেলো চুলে
বাতাস তুলেছে গ্রীবা,
চুমু খেয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়ার
উজ্জ্বল মধুরিমা ।
গতকাল বড়ো মুখোমুখি ছিল
সারাজীবনের চাওয়া,
চোখের নিমিষে চোখের ভিতরে
চোখের বাহিরে যাওয়া।
আরো কবিতা পড়তে ক্লিক কুরন। নির্মলেন্দু গুণ।
গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল – নির্মলেন্দু গুণ | বাংলা কবিতা বিশ্লেষণ
নির্মলেন্দু গুণ রচিত “গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল” বাংলা সাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা, যেখানে কবি শৈশব ও যৌবনের স্মৃতিকে নস্টালজিকভাবে উপস্থাপন করেছেন। কবিতাটির প্রথম লাইন “গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল” পাঠককে সাথে সাথেই অতীতের স্মৃতিময় জগতে নিয়ে যায়।
কবিতার সারাংশ
এই কবিতায় কবি শৈশব ও যৌবনের স্মৃতিকে অত্যন্ত মর্মস্পর্শীভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কবি গতকালের স্মৃতিকে বর্তমানের সাথে তুলনা করে দেখিয়েছেন কীভাবে সময়ের পরিবর্তনে জীবন বদলে যায়। শৈশবের সরলতা, যৌবনের উন্মাদনা এবং বর্তমানের ফাঁকা অনুভূতি – এই তিনটি পর্যায় কবিতায় সুন্দরভাবে চিত্রিত হয়েছে।
রূপক বিশ্লেষণ
কবিতায় “দেয়ালের মতো অনুভূতিমাখা মোম” একটি শক্তিশালী রূপক হিসেবে কাজ করেছে, যা মানবীয় অনুভূতির জমে থাকা স্তরকে নির্দেশ করে। “মোম” এখানে নরম ও গলনশীল মানসিকতার প্রতীক। “কৃষ্ণচূড়ার উজ্জ্বল মধুরিমা” যৌবনের রঙিন ও মধুর moments কে নির্দেশ করে।
প্রধান রূপকসমূহ
ছেলেবেলা – নির্দোষ শৈশবের প্রতীক; যৌবন – জীবনীশক্তির প্রতীক; মোম – নরম অনুভূতির প্রতীক; কৃষ্ণচূড়া – যৌবনের সৌন্দর্যের প্রতীক; মাটি – প্রেমের ভিত্তির প্রতীক।
কবির উদ্দেশ্য ও সাহিত্যধারা
নির্মলেন্দু গুণ বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের গুরুত্বপূর্ণ কবি। এই কবিতায় তার উদ্দেশ্য ছিল সময়ের সাথে সাথে মানুষের মানসিক পরিবর্তন এবং স্মৃতির গভীরতা তুলে ধরা। এটি নস্টালজিয়া কবিতা ও আত্মজীবনীমূলক কবিতার মিশ্র ধারায় রচিত।
আবেগ বিশ্লেষণ
কবিতায় গভীর নস্টালজিয়া, অনুশোচনা, এবং হারানোর বেদনা প্রকাশ পেয়েছে। কবির ভাষায় শৈশব ও যৌবনের স্মৃতি এতটা জীবন্ত যে পাঠক নিজের অতীত স্মৃতিতে হারিয়ে যান। “বুঝিনি কী হারালাম” – এই লাইনে কবির যে অনুশোচনা ফুটে উঠেছে, তা প্রতিটি পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে।
কবিতার কাঠামো বিশ্লেষণ
কবিতাটি মুক্ত ছন্দে রচিত, যেখানে প্রতিটি স্তবক জীবনের একটি বিশেষ পর্যায়কে represent করে। কবিতার গঠনশৈলীতে রয়েছে স্মৃতির ধারাবাহিক উপস্থাপনা।
শৈলীগত বৈশিষ্ট্য
কবি সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় গভীর philosophical thoughts প্রকাশ করেছেন। তাঁর শব্দচয়নে রয়েছে uncommon simplicity with profound depth.
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট
এই কবিতায় বাংলার গ্রাম্য জীবন ও প্রকৃতির ছোঁয়া রয়েছে। কৃষ্ণচূড়া ফুল, মাটি, গাছপালা – এই সকল উপাদান বাংলার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে নির্দেশ করে। কবি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক environment কে তার কবিতার background হিসেবে ব্যবহার করেছেন।
শিক্ষণীয় দিক
কবিতাটি পাঠককে শেখায় যে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান এবং সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত। এটি আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে শৈশব ও যৌবনের স্মৃতি পরবর্তী জীবনে mental strength হিসেবে কাজ করে।
মেটা ডেসক্রিপশন
নির্মলেন্দু গুণের “গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল” কবিতার সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ। কবিতার রূপক, ছন্দ, শৈলী ও দার্শনিক দিক নিয়ে গভীর আলোচনা। প্রথম লাইন “গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল” সহ সমগ্র কবিতার ব্যাখ্যা।
FAQ (প্রশ্ন ও উত্তর)
কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু কী?
কবিতাটির মূল বিষয়বস্তু হলো শৈশব ও যৌবনের স্মৃতিচারণ এবং সময়ের সাথে সাথে জীবনের পরিবর্তনশীলতা।
কবিতার প্রধান রূপকগুলি কী কী?
প্রধান রূপকগুলি হলো: ছেলেবেলা, যৌবন, মোম, কৃষ্ণচূড়া, এবং মাটি – যারাそれぞれ বিভিন্ন মানবীয় অনুভূতির প্রতীক।
নির্মলেন্দু গুণের কবিতার বৈশিষ্ট্য কী?
নির্মলেন্দু গুণের কবিতায় সাধারণত জীবনবোধ, সমাজচেতনা, এবং স্বদেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটে। তাঁর ভাষা সহজ কিন্তু গভীর অর্থপূর্ণ।
কবিতাটির প্রথম লাইন কী?
কবিতাটির প্রথম লাইন: “গতকাল বড়ো ছেলেবেলা ছিল” যা সরাসরি পাঠককে কবিতার মূল mood এ নিয়ে যায়।
কবিতাটি কোন ধারার অন্তর্গত?
কবিতাটি আধুনিক বাংলা কবিতার নস্টালজিয়া ধারার অন্তর্গত, যেখানে অতীত স্মৃতির মাধুর্য বর্তমানের সাথে contrast করা হয়েছে।
কবিতাটির বিশেষত্ব কী?
কবিতাটির বিশেষত্ব হলো এর সরল ভাষায় গভীর জীবনদর্শন প্রকাশ এবং স্মৃতির psychological depth ফুটিয়ে তোলা।
© Kobitarkhata.com – কবি: নির্মলেন্দু গুণ