একটি দুর্বোধ্য কবিতা – জয় গোস্বামী

এবার লক্ষ্মীশ্রী মুছে গেছে
লেগেছে কী তীব্র রূপটান
এইবার পথে বেরোলেই
সকলের চক্ষু টানটান

বাড়ি ফিরে সেই এক সংসার
সেই এক সাধারণ স্বামী
আজ শান্ত, কাল উদাসীন
বই নিয়ে আছে তো আছেই
অভিযোগ করাই বোকামী

অবশ্য মানুষটা ভালোই
নেশা নেই, ঠিক সময়ে ফেরে
অসুখ হলে উতলাও হয়
ছুটি নেয়, সেবাযত্ন করে
আমি ছাড়া অন্যকে জানে না
তাতেই কি সব হয়, বলুন?

সব কীসে, হয়, মা জননী •
বলো সে কারণগুলি খুঁজি
এই বাড়ি ছাড়া অন্য বাড়ি
গেলে সব পেয়ে যেতে বুঝি?

সারাদিন সেই এক সংসার
সেই এক জানলা আর ছাদ।
কাজের লোকের তদারকি
ন’টায় ও বেরিয়ে গেলেই।
সমস্যা ও স্মৃতিকথা সহ
সেই এক শ্বশুর শাশুড়ী

সে কবে কলেজবেলা ছিল
ছিল কত সাইকেল যুবক
তাদের ফিরিয়ে দেওয়া ছিল
সুন্দর ফিরিয়ে দেওয়াগুলি
আজ মনে পড়ে কি পড়ে না
আজ বুঝি কুড়িতেই বুড়ি!

দুই নয়। তিনের কোঠায়।
এইবার ঝ’রে যাবে ধার
দিন, বুঝি দিন চলে গেল
চোখ থেকে মুগ্ধতা পাবার-
ক’দিন, কয়েকদিন পরে
কেউ ফিরে তাকাবে কি আর?

আজ তাই ছোটো হোক চুল
খাটো হোক অঙ্গের বসন
আরো যত্নে মাজা হোক ত্বক
আরো তীব্র বাঁকা হোক ভুরু
একবার পথে বেরোলেই
‘কী জিনিস বেরিয়েছে গুরু!’

এইতো লক্ষ্মীশ্রী মুছে গেছে
আজ থেকে জেল্লা মার মার-
আজ থেকে স্বাধীনতা জারি
কাল ছিলে বধূমাতা, আজ
নারীমাংস, নারীমাংস, নারী….

পথে পথে সহস্র পুরুষ
মনে মনে নোংরা করবে তোকে
তাই নিয়ে, অবুঝের মতো
গর্ব হবে তোর, হতভাগী!

আমি কবি, দুর্বল মানুষ,
কীভাবে বাঁচাবো তোকে, ভাবি…..

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x