বাঁশিওয়ালা- শুভ দাশগুপ্ত

এক বাঁশিওয়ালা এসেছিল…..
তখন ফাল্গুন মাস
গাছে গাছে কত রঙ কত শোভা,কত পাখির কলতান।
নদীতে কী অপরূপ ছায়াময় ঢেউ
দূরপথে কী মায়াবী আলো
বাতাসে কী সুগন্ধ

এক বাঁশিওয়ালা এসেছিল
তাঁর বাঁশির সুর মোমের আলোর মত স্নিগ্ধ
তাঁর বাঁশির শব্দ পাতা ঝরার মতো পেলব
তাঁর বাঁশি কী করুণ
কী মোহময়!

সে এসেছিল জানলার পর্দা উড়লো হাওয়ায়
দুয়ারের আগল গেল খুলে
বাগানের গাছের পাতার ডালে
ছড়িয়ে পড়ল প্রজাপতির মতো রঙিন গান
আমার তখন অনেক কাজ।অনেক
ঘর সংসার সমাজ পরিবার দায়দায়িত্ব
অনেক অনেক।

মনটা আনচান করে উঠল
ভেতর থেকে কে যেন ঠেলা লাগালো….যাও যাও
দেরি কোরো না
কিন্তু আমার দেরি হয়ে গেল।
আমার পুজো,আমার গেরস্থালি,আমার কর্তব্য
আমার নিত্যদিনের
সাত-সতেরো ঝামেলা…
আমার দেরি হয়ে গেল।

যখন সব সেরে, সব চুকিয়ে ছুটে গেলাম
বাইরে বড় দরজাটারও বাইরে
রাঙাধুলোর বিষণ্ণ পথে
তখন বাঁশিটি পড়ে ছিল..ভাঙা, সুরহীন,স্তব্ধ
গোধূলির সোনালি আলোয়
বাঁশিটিকে মনে হল
যেন এক ঝরাপাতা বুঝি
আমি আমার সবটুকু দিয়ে বাঁশিওয়ালাকে খুঁজলাম।
সন্ধ্যালগনে আকাশে ফুটে ওঠা
প্রথম তারাটি বলল…..আমি এখানে।

মেঘ বললো – শুভ দাশগুপ্ত | আধুনিক রূপক কবিতার এক আত্মবিশ্লেষণ

“মেঘ বললো” কবিতাটি শুভ দাশগুপ্ত-এর সৃষ্ট এক আধুনিক বাংলা রূপক কবিতা, যা নারীর কল্পনা, স্বাধীনতা, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আত্মপ্রত্যয়ের গভীর প্রকাশ ঘটায়। কবিতাটি যেন এক নারীর আত্ম-আলাপ, যেখানে মেঘ হয়ে ওঠে তার নিজস্ব অভিলাষ, তার ভেতরকার মুক্তির তীব্র আকাঙ্ক্ষা।

শুরুতেই মেঘ প্রশ্ন করে— “যাবি?”। এই একটি শব্দই কবিতার মূল রূপক এবং দর্শনের ভিত্তি। এখানে মেঘ যেন এক অলৌকিক পথপ্রদর্শক, যে নারীকে আহ্বান জানায় সমস্ত নিয়ম, সামাজিক বাঁধন ও জীবনের দায় থেকে বেরিয়ে এক অনির্ধারিত অভিযাত্রায় যাওয়ার জন্য। নারী যেন দ্বিধাগ্রস্ত— একদিকে বাস্তব জীবন, অন্যদিকে স্বপ্ন ও স্বাধীনতার টান।

নিয়ম ঘেরা জীবন আমার” — এই পঙক্তির মাধ্যমে নারী তার জীবনের গণ্ডিবদ্ধ বাস্তবতাকে তুলে ধরে। কাজ, সংসার, দায়, দায়িত্ব—সব কিছুই তাকে পেছনে টানে। কিন্তু মনের গভীরে সে চায় উড়ে যেতে, মেঘের সঙ্গে, শ্রাবণের হাওয়ায়, পাহাড়ের গহীনে, গেরুয়া নদীর পাড়ে।

এই দ্বন্দ্বই কবিতার প্রাণ—রূপক আর বাস্তবতার এক গভীর সংলাপ। মেঘ যখন বলে— “সবুজ পাতায় পাতায় ভালবাসা হয়ে ঝরবো”, তখন সে একপ্রকার প্রেমিক, একপ্রকার বিপ্লবী, আবার একপ্রকার জীবনের বিকল্প রূপ। নারী তার সীমাবদ্ধতা স্বীকার করলেও কবিতার মধ্যবর্তী অংশে সে বলে— “ঘুমিয়ে পড়ি তখন আমি যাই” — অর্থাৎ স্বপ্নই তার মুক্তির পথ, যেখানে সে সমস্ত নিয়ম ভেঙে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে।

এই ‘স্বপ্নযাত্রা’ কবিতাটিকে আরো গভীরতর রূপ দেয়। সেখানে নারী খুঁজে পায় সে চায় অন্য এক জীবন, যা হয়তো বাস্তবে অসম্ভব, কিন্তু কল্পনায় সম্ভব। এই দ্যুতি ও বিমূর্ততা, এই কল্পনাপ্রবণ ভাষা বাংলা আধুনিক কবিতার গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত।

শেষে নারী বলে— “যাবো রে মেঘ যাবো” — এই প্রতিজ্ঞাটি যেন একটি নীরব বিপ্লব। সে জানে একদিন সে ঠিকই বেরিয়ে পড়বে, মেঘের সঙ্গে, নিয়মের বাইরে, সীমার বাইরে। এই প্রতিশ্রুতি একটি নিরীহ কবিতা নয়—বরং নারীর আত্মপ্রত্যয় ও নিজস্ব স্বপ্নের রূপক চিত্র।

SEO দৃষ্টিকোণ থেকে, “মেঘ বললো”, “শুভ দাশগুপ্ত”, “মেঘ বললো কবিতা বিশ্লেষণ”, “নারীর কল্পনা ও বাস্তবতা”, “বাংলা আধুনিক রূপক কবিতা”, “স্বপ্ন ও স্বাধীনতা”, “শ্রাবণের কবিতা”, “নারীর মানসিক দ্বন্দ্ব”, “নারীর কবিতা”, “বাংলা কাব্য বিশ্লেষণ” ইত্যাদি কীওয়ার্ড গুলো এই কবিতার প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

অনেক পাঠকের কাছে, বিশেষত নারীদের কাছে এই কবিতাটি হবে আত্মচেতনার এক নতুন আয়না। এটি কেবল একটি কবিতা নয়, বরং এক মানসিক মুক্তি, এক কল্পনার পদক্ষেপ, এবং এক সাহসী ঘোষণা যে, নারী নিজেই তার পথ নির্ধারণ করবে।

শুভ দাশগুপ্ত তাঁর শব্দচয়ন ও রূপক ব্যবহার করে এই কবিতায় একটি গল্পও নির্মাণ করেছেন—এক মেঘের, এক নারীর, এক দূরের পাহাড়ের, গেরুয়া নদীর ও শ্রাবণের বাতাসের। এইসব উপমা বাংলা কবিতার আবহে একটি চিরন্তন রোমান্টিকতা যুক্ত করে যা আধুনিক পাঠককেও নাড়িয়ে দেয়।

সাহিত্য বিশ্লেষণ ও পাঠপ্রতিক্রিয়ার দিক থেকে “মেঘ বললো” কবিতা একটি যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত, যেটি বাংলা সাহিত্যে নারীর অবস্থান, তার কল্পনা, সংকোচ ও মুক্তির ইচ্ছাকে কেন্দ্র করে রচিত। কবিতার ছন্দবদ্ধতা, বাক্যবিন্যাস, ও চিত্রকল্প এই ভাবগুলোকে আরও স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলে।

এই কবিতা সেই সকলের জন্য, যারা কখনো স্বপ্ন দেখেছেন পালিয়ে যাওয়ার, মেঘের সঙ্গে, কোনো এক অচেনা গন্তব্যে। যারা মনে করেন, কাজের চাপ, সংসারের টানাপোড়েনের মাঝে কল্পনা এখনও সম্ভব—এই কবিতা তাদের হৃদয়ে নাড়া দেবে।

ফোকাস কীওয়ার্ড:

  • মেঘ বললো
  • শুভ দাশগুপ্ত
  • মেঘ বললো কবিতা বিশ্লেষণ
  • নারীর কল্পনা ও বাস্তবতা
  • বাংলা আধুনিক রূপক কবিতা
  • স্বপ্ন ও স্বাধীনতা
  • শ্রাবণের কবিতা
  • নারীর মানসিক দ্বন্দ্ব
  • নারীর কবিতা
  • বাংলা কাব্য বিশ্লেষণ
  • শুভ দাশগুপ্তের কবিতা

সার্বিকভাবে, “মেঘ বললো” কবিতাটি একাধারে পাঠককে আবেগতাড়িত করে, ভাবনায় ডুবিয়ে রাখে এবং জীবনের গভীর কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়। এটি এমন একটি কবিতা যা SEO ও পাঠ প্রতিক্রিয়া—উভয়ের দিক থেকেই মূল্যবান সংযোজন। বাংলা কবিতা প্রেমী যে কেউ এই কবিতাটি পড়ে আবিষ্কার করবেন নিজের ভেতরের গোপন এক “মেঘ” কে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x