আছি, কিন্তু নেই এখানে ।
স্থবির, কিন্তু খরস্রোতা ।
আমার কাছে জীবন মানে
উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টিফোঁটা ।
চার দশকের চৌকাঠে দিন
রোদ্দুরও নেই তেমন বিশেষ
মুঠোই কেবল একটু জেদি ।
কে জানে হার মানবে কিসে …
তারই মধ্যে এসে দাঁড়াও
ফের সমস্ত ওলটপালট
সন্ধে চেনে আমার পাড়াও ।
এবারে রাত নামলে ভাল ।
শান্ত আছি। শান্ত থাকি।
কিন্তু হঠাৎ ঝড়ের বেগে
ঝাপটে আসে আগুনপাখি –
চোখ খুলে যায় বৃষ্টি লেগে।
ভাল্লাগে না ঘরের শোভা।
ইচ্ছে করে পথেই হারাই…
বাঁচলে মরি সহস্রবার
একটু করে জীবন সারাই।
ইচ্ছে করে শরীর ভেজাই।
ইচ্ছে করে পালাই কোথাও।
ইচ্ছে করে চুপ করে যাই।
ইচ্ছে করে অসভ্যতাও।
তোমাকে খুব ইচ্ছে করে।
যে তুমি ওই ছাতার আড়াল –
লোকটা নামেই পোশাক পরে।
আসলে আদ্যন্ত চাঁড়াল।
তোমায় সে খুব মুঠোয় ভ’রে
ছুঁড়বে কোনও দূর সীমানায়
রাস্তাগুলো এমনি ঘোরে।
দিগন্তরাই ম্যাজিক বানায়।
সেসব জাদুর একটা দুটো
অনভ্যেসেই আঙুলছাড়া।
দ্যাখো, আবার খুলছি মুঠো,
রাত নামছে আমার পাড়ায়।
তোমার সঙ্গে নোনতা মিঠে
খুনসুটি প্রেম বিষণ্ণতা
তোমার যেটা বাস্তুভিটে,
আমার সেটাই বৃষ্টিফোঁটা।
চলতি পথের হরেক মোড়ে
এমন তোমায় দেখব কত
আগুনপাখির শরীর পোড়ে-
ভাবনা তবু অবিক্ষত।
কখনও ঠিক হয়না দেখা
অথচ রোজ সঙ্গে থাকো
ভিড়ের মাঝে একলা একা
নদীর ওপর যেমন সাঁকো…
এক জন্মের অনেক চেনা।
এক চেনারও জন্ম অনেক।
আশ্বিনে বসন্তসেনা,
ছাড় দেবে কি প্রেমিকজনে ?
বেঁচে থাকার এই যে আমেজ,
চিরকালীন, না মরসুমি ?
হয়তো আবার নতুন নামে
আমার প্রেমেই পড়বে তুমি !
প্রেমিকজনের চিঠি – শ্রীজাত | আধুনিক প্রেম ও বিষণ্ণতার অন্তর্জগৎ
প্রেমিকজনের চিঠি – শ্রীজাত একটি সমসাময়িক বাংলা কবিতা যা আধুনিক ভালোবাসার, বিরহের ও আত্মদ্বন্দ্বের নিখুঁত এক চিত্র ফুটিয়ে তোলে। কবিতাটি শুরু হয় “আছি, কিন্তু নেই এখানে”—এই আকর্ষণীয় ও রহস্যময় প্রথম পঙক্তির মাধ্যমে, যা কবির অবস্থান ও আত্মিক অনুভবের দোলাচল প্রকাশ করে। শ্রীজাতের কবিতা বরাবরের মতো এবারেও ভাষার গীতিময়তা ও আবেগের তীব্রতাকে একত্র করে এক অসাধারণ কাব্যিক অভিজ্ঞতা তৈরি করেছে।
কবিতায় প্রেমিক ও প্রেমিকার সম্পর্কটি শুধু বাস্তবতার নয়, বরং তা একটি আবেগঘন অভ্যন্তরীণ আলোড়ন। কবির শব্দচয়নে যেন বৃষ্টিভেজা জানালা, বিষণ্ণ সন্ধ্যা, হঠাৎ হাওয়া ও ছাতার আড়ালের কল্পচিত্র নির্মিত হয়েছে। “উইন্ডস্ক্রিনে বৃষ্টিফোঁটা” কেবল একটি দৃশ্য নয়, বরং এটি জীবনের ব্যথা ও বিমূর্ততার এক উপমা। কবিতার প্রতিটি স্তবক প্রেমিকের মনের গভীরে জমে থাকা প্রেম ও ক্ষতের নীরব প্রকাশ।
কবি শ্রীজাত তাঁর বিশেষ ভঙ্গিমায় আমাদের শোনান এক প্রেমিকের অন্তর্দহন, যেখানে “তোমাকে খুব ইচ্ছে করে” — এই স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে উঠে আসে একরকম আত্মসমর্পণ। কবিতাটি সমকালীন শহরজীবনের প্রেম, বিচ্ছেদ, আকাঙ্ক্ষা এবং সামাজিক মুখোশের সমালোচনা করেও চলে গেছে এক অন্তর্দর্শনের স্তরে। প্রেমিকার পাশে থাকা সত্ত্বেও বিচ্ছিন্নতার অনুভব, সমাজের ছলনাময় ছায়া, আর কবির আত্মপ্রবঞ্চনা যেন একসাথে ছড়িয়ে পড়েছে এই কবিতায়।
“তোমার সঙ্গে নোনতা মিঠে / খুনসুটি প্রেম বিষণ্ণতা”—এই দু’টি মাত্র পঙক্তি একটি পূর্ণ সম্পর্কের সূক্ষ্ম অনুভূতি তুলে ধরে। এখানে প্রেম কেবল রোমান্স নয়, বরং হাসি-কান্না, দূরত্ব ও জেদ – সব মিলিয়েই এক জটিল বাস্তবতা। কবি তাঁর ছন্দে, শব্দে, চিত্রকল্পে এবং সৃষ্ট বৃষ্টিভেজা মানসপটে প্রেমিকজনের চিঠিকে পরিণত করেছেন এক অন্তর্জগৎ অন্বেষণের যাত্রায়।
SEO-এর দৃষ্টিকোণ থেকে এই কবিতাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর প্রধান ফোকাস কীওয়ার্ড—“প্রেমিকজনের চিঠি”, “শ্রীজাত”, এবং “আছি, কিন্তু নেই এখানে”—এসব শব্দগুচ্ছ বাংলা কবিতাপ্রেমীদের মাঝে বারবার অনুসন্ধান করা হয়। বাংলা সাহিত্যের ডিজিটাল উপস্থিতিকে সমৃদ্ধ করতে এই কবিতাটি ওয়েবসাইটে সংরক্ষণ ও যথাযথভাবে ইন্ডেক্সিং করা বিশেষভাবে জরুরি।
“এক জন্মের অনেক চেনা / এক চেনারও জন্ম অনেক”—এই পঙক্তিগুলো শুধু কবিতার নয়, জীবনেরও এক গভীর দর্শন। কবিতা পাঠ শেষে পাঠক বুঝে যান—এই লেখাটি কেবল একজন প্রেমিকের বেদনাদায়ক মনোলগ নয়, এটি আমাদের সময়ের এক কাব্যিক দলিল। শ্রীজাত তাঁর শব্দে শব্দে সৃষ্টি করেছেন প্রেম, প্রত্যাখ্যান, পুনরাবিষ্কার এবং সময়ের আগুনে পুড়ে খাঁটি হয়ে ওঠা ভালোবাসার এক অনুপম উপাখ্যান।
ফোকাস কীওয়ার্ড:
- প্রেমিকজনের চিঠি
- শ্রীজাত
- আছি, কিন্তু নেই এখানে
- আধুনিক বাংলা প্রেমের কবিতা
- আবেগঘন কবিতা
- বিরহের কবিতা
- শহুরে প্রেম
- বাংলা সমকালীন কবি
- প্রেমিকের আত্মকথন
- বাংলা আবৃত্তিযোগ্য কবিতা
এই বর্ণনাটি বিশেষভাবে সার্চ ইঞ্জিন বটের জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে “প্রেমিকজনের চিঠি – শ্রীজাত” কবিতাটি সহজে Google ও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হয় এবং প্রেমপ্রেমিক পাঠকদের কাছে পৌঁছাতে পারে। এটি কবিতার সৌন্দর্য ও গভীরতা উভয়কেই ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করে।