পাগলিটা ও মা হয়েছে- নিলাদ্রী নাজিম।

পাগলিটা ও মা হয়েছে – নিলাদ্রী নাজিম

কবিতাটি “পাগলিটা ও মা হয়েছে” নারীর দুঃখ, সংগ্রাম, এবং সমাজের প্রতি প্রতিবাদী আবেগ প্রকাশ করে। কবি নিলাদ্রী নাজিম এই কবিতায় একজন পাগলি মহিলার জীবনের কষ্ট এবং তার মা হওয়ার যন্ত্রণা, তার শারীরিক ও মানসিক সংগ্রামের গভীর চিত্র তুলে ধরেছেন।

কবিতার সারাংশ: পাগলিটা ও মা হয়েছে

কবিতাটি একজন পাগলি মহিলার যন্ত্রণা এবং তার মা হওয়ার যাত্রা নিয়ে। এখানে কবি সেই নারীকে চিত্রিত করেছেন, যিনি সারা পৃথিবীর অবহেলা এবং নির্যাতনের শিকার হলেও, তার অন্তরে এক নতুন জীবন ধারণ করে—যার পেটের মধ্যে গড়ে ওঠে একটি শিশু। কবি নারী শোষণ এবং তার যন্ত্রণার বাস্তবতা তুলে ধরে, সেই পাগলি মহিলার মায়ের ভূমিকা এবং তার প্রতিবাদী অবস্থানকে মেনে নিয়ে লেখেন।

রূপক বিশ্লেষণ: পাগলিটা ও মা হয়েছে

কবিতায় “পাগলি” এবং “মা” এই দুই শব্দের মাধ্যমে কবি নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার অভ্যন্তরীণ সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরেছেন। “প্রসব ব্যাথার ঢেউ” এবং “মাসিক নামের ব্যাথা” এই দুটি রূপক নারীর শারীরিক যন্ত্রণা এবং তার সংগ্রামকে প্রতীকীভাবে দেখাচ্ছে। নারীর প্রতি অবহেলা এবং যন্ত্রণা সত্ত্বেও তার জীবনের নতুন উদ্দেশ্য—একটি শিশু জন্ম দেওয়া—এটি কবির প্রতীকী ভাষায় অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

কবির উদ্দেশ্য: পাগলিটা ও মা হয়েছে

কবি নিলাদ্রী নাজিম “পাগলিটা ও মা হয়েছে” কবিতার মাধ্যমে নারীর অবস্থা এবং সমাজের পক্ষ থেকে তার প্রতি নির্যাতন ও অবহেলার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। কবির উদ্দেশ্য শুধু শোষণ ও অবহেলা নয়, বরং নারী শক্তি এবং তার আত্মবিশ্বাসের প্রসঙ্গ তুলে ধরা, যা সে তার শারীরিক কষ্টের মধ্যেও মা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কবি এই কবিতার মাধ্যমে নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারীর অবিচ্ছিন্ন সাহসিকতাকে তুলে ধরেছেন।

আবেগ বিশ্লেষণ: পাগলিটা ও মা হয়েছে

এই কবিতায় কবি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে নারীর যন্ত্রণা, সংগ্রাম, এবং তার মা হওয়ার আনন্দ এবং দুঃখের মিশ্রণ তুলে ধরেছেন। “পাগলিটাও মা হয়েছে” পংক্তিটি এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা নারীর সামাজিক অবস্থান, শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যেও তার নতুন জীবন, মা হওয়ার অনুভূতি এবং সমাজের প্রতি প্রতিবাদ প্রকাশ করে। “কষ্ট পেয়ে মরলো শুধু পাগলি মায়ের জাত” – এই পংক্তির মাধ্যমে কবি নারীর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের কষ্ট এবং তার দৃঢ় মনোবলকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

নারী এবং সমাজ: পাগলিটা ও মা হয়েছে

কবিতার মধ্যে “পাগলি” চরিত্রের মাধ্যমে কবি সমাজের নারীদের অবহেলা, শোষণ, এবং তাদের প্রতি প্রতিকূল অবস্থান প্রদর্শন করেছেন। এই কবিতায় নারীর সামাজিক ভূমিকা, তার যন্ত্রণার সময়ও তার মা হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস এবং প্রেরণা দানের কথা বলা হয়েছে। “পাগলি” এখানে একটা শব্দ নয়, বরং একজন সংগ্রামী নারী, যার মধ্য দিয়ে কবি নারীর অবস্থান এবং তার মানবিক শক্তিকে চিত্রিত করেছেন।

মেটা ডেসক্রিপশন

বাংলা কবিতা “পাগলিটা ও মা হয়েছে” এর বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা। কবিতার রূপক, উদ্দেশ্য এবং আবেগপূর্ণ বিশ্লেষণ যা SEO জন্য উপযোগী। কবিতাটি নারীর শারীরিক কষ্ট, অবহেলা, এবং তার মা হওয়ার অভিজ্ঞতার প্রতি কবির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

FAQ (প্রশ্ন ও উত্তর)

কবিতাটি কোন সাহিত্যধারায় পড়ে?

এটি নারীবাদী সাহিত্যের ধারায় অন্তর্গত একটি কবিতা, যেখানে নারীর শোষণ, সংগ্রাম এবং তার জীবনের আত্মবিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে।

কবিতার মূল রূপক কী?

“পাগলি” এবং “মা” রূপক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা নারীর শারীরিক যন্ত্রণা এবং সমাজের প্রতি প্রতিবাদী অবস্থানকে চিত্রিত করে।

কবির উদ্দেশ্য কী?

কবি নারীর সংগ্রাম, শোষণ এবং সমাজে তার ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরতে চেয়েছেন।

© Kobitarkhata.com – কবি: নিলাদ্রী নাজিম

পাগলিটাও মা হয়েছে
তবে বাবা হয়নি কেউ,
পাগলি বলে যায়নি ছেড়ে
প্রসব ব্যাথার ঢেউ.

পাগলিও যে নারি শরীর
বয়ে বেড়ায় তার,
ছেড়ে যায়নি মাসিক নামের
ব্যাথার অনাচার.

রাস্তায় ঘুরে কাটে দিন আর
রাস্তায় কাটে রাত,
পাগলি বলে স্বামি হয়নি
পায়নি সংসার স্বাদ.

কিভাবে সে মা হয় তবে
গর্ভে লয় সন্তান?
নাকি আবার জন্ম নিলো
যিশু ভগবান. .

পাগলি ও কি করেছিল
যৌন আহবান,
নাকি রাতের বেলা বেইশ্যা হয়ে
করল শরীর দান.

দশমাসেতে পাগলি ছিল
কত বেদনায়,
পেট বেড়েছে পোঁয়াতি সে
কিসের তাড়নায়.

ক্ষুধায় খেল আবর্জনা
কখনো না খেয়ে,
বাচ্চা পেটে ছোটাছুটি
কে দেখেছে চেয়ে,

বাচ্চা মারে পেটে লাতি
মানুষ মারে পিঠে,
হাতুড়িতে আঘাত হানে
ফাটল ধরা ইটে.

ব্যাথায় যেদিন কুকড়েছিল
কে দেখে বল কাকে,
হাউ মাউ করে কেঁদেও সে
পায়নি সাড়া ডাকে.

সেইতো বোঝে প্রসব ব্যাথা
যে হয়েছে মা,
পাগলিটাও মা হয়েছে
বাপটা কেউ না.

গাছ ফেটে যে গাছ বেরোলো
কে দিয়েছে বীজ.
মেয়ে শরীর পেয়ে রাতে
কে ঢেলেছে বিষ,

জন্ম নিল যে শিশুটি
কাকে ডাকবে বাপ.
অবৈধ বলবে সবাই যারে
যে সমাজের পাপ.

পাগলি বলে দমকে বলি
এখান থেকে ফুট.
রাতের বেলা পাগলির শরীর
করে এলাম লুট,

দশটা মাসে কি খেয়েছে
রক্ত গেল কত.
কে দেখেছে দশটি মাসে
ব্যাথায় ছিল শত,

কে জানে তার শরীরটাকে
আরো কতবার.
চুষে খেয়ে চিবিয়েছে
কত জানোয়ার.

পুরুষ গেল শরীর খেয়ে
নিয়ে গেল স্বাদ,
কষ্ট পেয়ে মরলো শুধু
পাগলি মায়ের জাত.

ভিখারিনী বলে মায়ের জাতি
জন্ম দিয়ে নিজেই হল কাল,
পাগলিটাও মা হয়েছে
মা হয়েছে মাল,

রাতের বেলা নারির শরির
ভোগ্য পন্যময়,
নিজেকে আজ পুরুষ ভাবতে
বড়ই লজ্জা হয়…

আরো কবিতা পড়তে ক্লিক করুন। নিলাদ্রী নাজিম

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x