কবিতার খাতা
- 6 mins
আমার দুখিনী বাংলা – আবদুল গাফফার চৌধুরী।
কবিতা “আমার দুখিনী বাংলা” – বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা
এই কবিতাটি বাংলার দুঃখ-দুর্দশা ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করে, যেখানে কবি আবদুল গাফফার চৌধুরী বাংলাকে মায়ের রূপে চিত্রিত করেছেন। কবিতাটির ভাষা মর্মস্পর্শী ও আবেগঘন, যা পাঠকের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করে।
কবিতার সারাংশ
কবিতাটি বাংলার শ্যামলিমা ও সৌন্দর্যের মধ্যেও বিদ্যমান দুঃখ-দারিদ্র্যের চিত্র তুলে ধরে। কবি বাংলাকে মায়ের সাথে তুলনা করে এর বর্তমান দুর্দশার কারণ জানতে চেয়েছেন এবং বাংলার সম্পদ লুণ্ঠিত হওয়ার বেদনা প্রকাশ করেছেন।
রূপক বিশ্লেষণ
কবিতে বাংলাকে ‘মা’ রূপে চিত্রায়িত করা হয়েছে, যা মাতৃভূমির প্রতি গভীর স্নেহ ও মমত্ববোধের প্রকাশ। ‘অহল্যা’ রূপকটি ব্যবহার করে কবি বাংলার বর্তমান নিষ্প্রাণ ও শাপগ্রস্ত অবস্থাকে নির্দেশ করেছেন। ‘অন্নপূর্ণা’ রূপক দিয়ে বাংলার খাদ্যসম্পদ ও fertility-কে বোঝানো হয়েছে।
কবির উদ্দেশ্য ও সাহিত্যধারা
কবি আবদুল গাফফার চৌধুরী বাংলার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, শোষণ ও বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন। সাহিত্যধারায় এটি দেশপ্রেম ও সামাজিক সচেতনতামূলক কবিতার অন্তর্গত। কবিতাটি বাংলার স্বাধীনতা পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট প্রতিফলিত করে।
আবেগ বিশ্লেষণ
এই কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমত্ববোধ, বেদনা, ক্ষোভ ও প্রশ্নের সমন্বয় ঘটেছে। কবির হৃদয়স্পর্শী আবেগ পাঠকের মনে মাতৃভূমির জন্য গভীর ভালোবাসা ও দুঃখবোধ জাগ্রত করে।
মেটা ডেসক্রিপশন
বাংলা কবিতা “আমার দুখিনী বাংলা” – আবদুল গাফফার চৌধুরীর দেশপ্রেমমূলক কবিতা বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা। কবিতার রূপক, উদ্দেশ্য এবং আবেগপূর্ণ বিশ্লেষণ যা এসইওর জন্য উপযোগী। কবিতার প্রথম লাইন: “আমার দুখিনী বাংলা মা, তুই আমার জননী”
FAQ (প্রশ্ন ও উত্তর)
কবিতাটি কোন সাহিত্যধারায় পড়ে?
এটি দেশপ্রেম ও সামাজিক সচেতনতামূলক কবিতার ধারায় অন্তর্গত একটি মর্মস্পর্শী রচনা।
কবিতার মূল রূপক কী?
বাংলাকে ‘মা’ রূপে চিত্রায়ণ এবং ‘অহল্যা’ রূপক ব্যবহার করে বাংলার শাপগ্রস্ত অবস্থাকে নির্দেশ করা হয়েছে।
কবি আবদুল গাফফার চৌধুরী সম্পর্কে জানতে চাই
আবদুল গাফফার চৌধুরী একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও গীতিকার। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো” গানের রচয়িতা হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।
কবিতাটির historical context কী?
কবিতাটি সম্ভবত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সময়ের সামাজিক-অর্থনৈতিক সংকট ও বাংলার মানুষের দুঃখ-দুর্দশার পটভূমিতে রচিত।
কবিতার মূল বিষয়বস্তু
কবিতাটি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদের বিপরীতে এর বাস্তব দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে। কবি বাংলার শ্যামলিমা, সোনার ধান, নদী-নালার সাথে এর মানুষের দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও লুণ্ঠনের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন।
কবিতার শৈলীগত বৈশিষ্ট্য
কবিতাটিতে traditional বাংলা কবিতার ছন্দ ও অন্ত্যমিল ব্যবহৃত হয়েছে। সরল ও হৃদয়স্পর্শী ভাষায় রচিত এই কবিতা বাংলার সাধারণ মানুষের আবেগ-অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে।
© Kobitarkhata.com – কবি: আবদুল গাফফার চৌধুরী
আমার দুখিনী বাংলা
মা, তুই আমার জননী
তোর ওই আকাশে চাঁদ
আর দিনে হাসে দিনমণি।
তবু তোর চোখে কেন অশ্রুভরা জল
মা তুই অহল্যা হলি কার শাপে বল?
আমার দুখিনী বাংলা
মা তোর এত শ্যামলিমা
মা তোর স্তন্যপায়ী
দেহে তোরই সুধা অরুণিমা।
মা তোর চোখের জলে
কেন নদী উতরোল
মা তুই অহল্যা হলি
কার শাপে বল্?
তুই অন্নপূর্ণা জানি
আজ একি অভিশপ্ত খরা
মা তোর সোনার ধানে
সিন্ধু পার কার ভাওভরা
তোর ছেলে উপবাসী
কন্যা তোর কলঙ্কিনী সীতা
যা ছিল সৃষ্টির পাত্রে
প্রজ্ঞা পারমিতা
সবাই তো লুণ্ঠিত মাগো
বল তুই বল
তোর এই অহল্যা মূর্তি
কার শাপে বল্?
আরো কবিতা পড়তে ক্লিক করুন। আবদুল গাফফার চৌধুরী।