
কবিতার কসম খেলাম-হেলাল হাফিজ
আমি আর আহত হবো না, কোনো কিছুতেই আমি শুধু আর আহত হবো না। যে নদী জলের ভারে হারাতো প্লাবনে এখন শ্রাবণে সেই জলের নদীর বুকে জলাভাবে হাহাকার দেখে আমি আহত হবো না। সবুজ সবুজ মাঠ চিরে চিরে কৃষকের রাখালের পায়ে…
আমি আর আহত হবো না, কোনো কিছুতেই আমি শুধু আর আহত হবো না। যে নদী জলের ভারে হারাতো প্লাবনে এখন শ্রাবণে সেই জলের নদীর বুকে জলাভাবে হাহাকার দেখে আমি আহত হবো না। সবুজ সবুজ মাঠ চিরে চিরে কৃষকের রাখালের পায়ে…
পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে মনে পড়ে একদিন জীবনের সবুজ সকালে নদীর উল্টো জলে সাঁতার দিয়েছিলাম। পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে একদিন যৌবনের শৈশবেই যৌবনকে বাজি ধরে জীবনের অসাধারণ স্কেচ এঁকেছিলাম। শরীরের শিরা ও ধমনী থেকে লোহিত কণিকা…
ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে জীবন বাজি ধরেছিলাম প্রেমের নামে রক্ত ঋণে স্বদেশ হলো, তোমার দিকে চোখ ছিলো না জন্মভূমি সেদিন তোমার সতীন ছিলো। আজকে আবার জীবন আমার ভিন্ন স্বপ্নে অংকুরিত অগ্ন্যুৎসবে তোমাকে চায়…
মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার। নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে। বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে, বারবার কতোবার। মনে আছে, আমার জ্বালার বুক তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি বিস্ফোরণে প্রকম্পিত…
মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই, উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ শুধু যদি নারীকে সাজাই।
এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। মিছিলের সব হাত কণ্ঠ পা এক নয়। সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে, কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার।…
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,তোমাকে পাওয়ার জন্যেআর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন? তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর।তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলোদানবের মতো চিৎকার করতে করতেতুমি…
গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরবীর মতো কিংবা সূর্যাস্তেরজ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের শার্টউড়ছে হাওয়ায় নীলিমায়। বোন তার ভায়ের অম্লান শার্টে দিয়েছে লাগিয়েনক্ষত্রের মতো কিছু বোতাম কখনোহৃদয়ের সোনালি তন্তুর সূক্ষ্মতায়বর্ষীয়সী জননী সে-শার্টউঠোনের রৌদ্রে দিয়েছেন মেলে কতদিন স্নেহের বিন্যাসে। ডালিম গাছের মৃদু ছায়া আর রোদ্দুর-শোভিতমায়ের…
ভীষণ ক্ষুধার্ত আছিঃ উদরে, শরীরবৃত্ত ব্যেপেঅনুভূত হতে থাকে- প্রতিপলে- সর্বগ্রাসী ক্ষুধাঅনাবৃষ্টি- যেমন চৈত্রের শষ্যক্ষেত্রে- জ্বেলে দ্যায়প্রভুত দাহন- তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহদু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোন দাবীঅনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, সকলেই চায়ঃবাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি- কারো বা…
আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর,চতুর্দিকে চিক্চিক করছে রোদ্দুর-’আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীনএকটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে। কেউ চিনতে পারেনি আমাকে,ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকেআগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহাকুমা স্টেশনে উঠেইআমাকে জাপটে ধরতে চেয়েছিল, একজন পেছন থেকেকাঁধে হাত…