
হিরণবালা-হেলাল হাফিজ
হিরণবালা তোমার কাছে দারুণ ঋণী সারা জীবন যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে। ফুলের কাছে মৌমাছিরা বা য়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী খোদার কসম হিরণবালা তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমনি ঋণী। তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি…
হিরণবালা তোমার কাছে দারুণ ঋণী সারা জীবন যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে। ফুলের কাছে মৌমাছিরা বা য়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী খোদার কসম হিরণবালা তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমনি ঋণী। তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি…
আমাকে দুঃখের শ্লোক কে শোনাবে? কে দেখাবে আমাকে দুঃখের চিহ্ন কী এমন, দুঃখ তো আমার সেই জন্ম থেকে জীবনের একমাত্র মৌলিক কাহিনী। আমার শৈশব বলে কিছু নেই আমার কৈশোর বলে কিছু নেই, আছে শুধু বিষাদের গহীন বিস্তার। দুঃখ তো আমার…
পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে মনে পড়ে একদিন জীবনের সবুজ সকালে নদীর উল্টো জলে সাঁতার দিয়েছিলাম। পতন দিয়েই আমি পতন ফেরাবো বলে একদিন যৌবনের শৈশবেই যৌবনকে বাজি ধরে জীবনের অসাধারণ স্কেচ এঁকেছিলাম। শরীরের শিরা ও ধমনী থেকে লোহিত কণিকা…
প্রেমের প্রতিমা তুমি, প্রণয়ের তীর্থ আমার। বেদনার করুণ কৈশোর থেকে তোমাকে সাজাবো বলে ভেঙেছি নিজেকে কী যে তুমুল উল্লাসে অবিরাম তুমি তার কিছু কি দেখেছো? একদিন এই পথে নির্লোভ ভ্রমণে মৌলিক নির্মাণ চেয়ে কী ব্যাকুল স্থপতি ছিলাম, কেন কালিমা না…
এই তো আবার যুদ্ধে যাবার সময় এলো আবার আমার যুদ্ধে খেলার সময় হলো এবার রানা তোমায় নিয়ে আবার আমি যুদ্ধে যাবো এবার যুদ্ধে জয়ী হলে গোলাপ বাগান তৈরি হবে। হয় তো দু’জন হারিয়ে যাবো ফুরিয়ে যাবো তবুও আমি যুদ্ধে যাবো…
একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম শুধু আমাকেই দেখা যায়, আলোর প্রতিফলন প্রতিসরণের নিয়ম না জানা আমি সেই থেকে আর কোনোদিন আয়না দেখি না। জননীর জৈবসারে বর্ধিত বৃক্ষের নিচে কাঁদতাম যখন দাঁড়িয়ে সজল শৈশবে, বড়ো সাধ হতো আমিও কবর হয়ে যাই,…
ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে জীবন বাজি ধরেছিলাম প্রেমের নামে রক্ত ঋণে স্বদেশ হলো, তোমার দিকে চোখ ছিলো না জন্মভূমি সেদিন তোমার সতীন ছিলো। আজকে আবার জীবন আমার ভিন্ন স্বপ্নে অংকুরিত অগ্ন্যুৎসবে তোমাকে চায়…
মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার। নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে। বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে, বারবার কতোবার। মনে আছে, আমার জ্বালার বুক তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি বিস্ফোরণে প্রকম্পিত…
মানব জন্মের নামে হবে কলঙ্ক হবে এরকম দুঃসময়ে আমি যদি মিছিলে না যাই, উত্তর পুরুষে ভীরু কাপুরুষের উপমা হবো আমার যৌবন দিয়ে এমন দুর্দিনে আজ শুধু যদি নারীকে সাজাই।
তুমি এলেই দেখতে পেতে, শুয়ে-থাকাটাই ঘুম নয়, চারদিকে মশারির মতো নেমে-আসা সমস্যার ভিতরে কিছু নেই, কেবল কবর খোঁড়ে অন্ধকার চোখের ব্যথায়। আমি যত কাছে টানি, আলো তত দূরে সরে যায়। তুমি এলেই দেখতে পেতে, শুয়ে-থাকাটাই ঘুম নয়। আমার বুকের মধ্যে…