লবণ – আদিত্য অনীক

তাই চল্লিশ বছর তোমার হাতে লবণ চা খেয়ে গেলাম।
তোমার হাতের লবণ-চা খুব মিষ্টি।

বুড়ি প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে গেলো একদিন। তাকে চা দেয়া হলো
বুড়ি বলল, একটু লবণ দিন।
অবাক হয়ে প্রতিবেশী বলল, আপনি লবণ দিয়ে চা খাবেন নাকি?
বুড়ি বলল, হ্যাঁ, লবণ-চা খুব মিষ্টি।

বই মেলায়, থিয়েটারে, ক্যাফেটেরিয়ায়, পহেলা বৈশাখে, ভ্যালেন্টাইন উতসবে
শুধু মেয়েটার চোখে পড়ার দুঃসহ চেষ্টা ছাড়া ছেলেটা পুরাদস্তুর সাধারণ
মেয়েটা রূপে ও লাবণ্যে ফ্যাসনে ও বসনে আগাগোড়া বিশেষণ
এক ঝাঁক প্রজাপতি উচ্ছল তরুণের ভিড়ে ছেলেটা একেবারে অপাঙ্তেয়
তবু অতি বড়ো সাহস করে একদিন বলেই ফেলল, আমার সাথে চা খাবে?

ছেলেটার দুঃসাহসী অফারে অবাক মেয়েটা কী জানি কি মনে করে বলল, চল।
মেয়েটার মুখোমুখি বসা ছেলেটার বুক ধড়ফড়, আড়ষ্ট জিহ্বা,

চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ওয়েটার আমাকে লবণ দাও।
মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, তুমি চায়ে লবণ খাবে নাকি?

ছেলেটা বলল, হ্যাঁ, আমার জন্ম নোনা জলের সাগর পারে,
নোনা চায়ে চুমুক দিলে আমার চোখে ভেসে ওঠে

আমার গ্রাম, নোনা জলে ভেসে যাওয়া আমার বাবা মায়ের মুখ।
মেয়েটা অবাক হয়ে শুনলো ছেলেটার কথা, তারপর বলল,
আমি কোনোদিন সাগর দেখিনি, আমার বাড়ি পাহাড়ে,
ওখানে গা ছুঁয়ে উড়ে যায় কোমল মেঘ পাখির মতো।

সাগর আর পাহাড়ের গল্প ক্রমেই নিবিড় হলো দিনে দিনে।

তারপর বিয়ে সংসার এবং শেষে বুড়ো ও বুড়ি।
বুড়ো মরার আগে বুড়ির হাতে একটা চিঠি দিয়ে বলল, মরার পর খুলবে।
বুড়ো মারা যাওয়ার পর বুড়িটা চিঠিটা খুলল, তাতে লেখা আছে,
লবণ দিয়ে চা আমি কখনোই খেতাম না,

তোমার সামনে থতমত খেয়ে চিনি বলতে লবণ বলে ফেলেছিলাম।

আর বোকামি ঢাকতে অমন গল্প ফেঁদেছিলাম।

লবণ – আদিত্য অনীক

লবণ – আদিত্য অনীক

বই মেলায়, থিয়েটারে, ক্যাফেটেরিয়ায়, পহেলা বৈশাখে, ভ্যালেন্টাইন উতসবে
শুধু মেয়েটার চোখে পড়ার দুঃসহ চেষ্টা ছাড়া ছেলেটা পুরাদস্তুর সাধারণ
মেয়েটা রূপে ও লাবণ্যে ফ্যাসনে ও বসনে আগাগোড়া বিশেষণ।
এক ঝাঁক প্রজাপতি উচ্ছল তরুণের ভিড়ে ছেলেটা একেবারে অপাঙ্তেয়
তবু অতি বড়ো সাহস করে একদিন বলেই ফেলল, আমার সাথে চা খাবে?

প্রথম সাক্ষাৎ

ছেলেটার দুঃসাহসী অফারে অবাক মেয়েটা কী জানি কি মনে করে বলল, চল।
মেয়েটার মুখোমুখি বসা ছেলেটার বুক ধড়ফড়, আড়ষ্ট জিহ্বা, চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ওয়েটার আমাকে লবণ দাও।
মেয়েটা অবাক হয়ে বলল, তুমি চায়ে লবণ খাবে নাকি?

চায়ে লবণ

ছেলেটা বলল, হ্যাঁ, আমার জন্ম নোনা জলের সাগর পারে,
নোনা চায়ে চুমুক দিলে আমার চোখে ভেসে ওঠে
আমার গ্রাম, নোনা জলে ভেসে যাওয়া আমার বাবা মায়ের মুখ।
মেয়েটা অবাক হয়ে শুনলো ছেলেটার কথা, তারপর বলল,
আমি কোনোদিন সাগর দেখিনি, আমার বাড়ি পাহাড়ে,
ওখানে গা ছুঁয়ে উড়ে যায় কোমল মেঘ পাখির মতো।

সাগর ও পাহাড়

সাগর আর পাহাড়ের গল্প ক্রমেই নিবিড় হলো দিনে দিনে।

বিয়ের পর

তারপর বিয়ে সংসার এবং শেষে বুড়ো ও বুড়ি।
বুড়ো মরার আগে বুড়ির হাতে একটা চিঠি দিয়ে বলল, মরার পর খুলবে।
বুড়ো মারা যাওয়ার পর বুড়িটা চিঠিটা খুলল, তাতে লেখা আছে,
লবণ দিয়ে চা আমি কখনোই খেতাম না,
তোমার সামনে থতমত খেয়ে চিনি বলতে লবণ বলে ফেলেছিলাম।

মিথ্যাচার

আর বোকামি ঢাকতে অমন গল্প ফেঁদেছিলাম।
তাই চল্লিশ বছর তোমার হাতে লবণ চা খেয়ে গেলাম।
তোমার হাতের লবণ-চা খুব মিষ্টি।

চিঠি

বুড়ি প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে গেলো একদিন। তাকে চা দেয়া হলো।
বুড়ি বলল, একটু লবণ দিন।
অবাক হয়ে প্রতিবেশী বলল, আপনি লবণ দিয়ে চা খাবেন নাকি?
বুড়ি বলল, হ্যাঁ, লবণ-চা খুব মিষ্টি।

এই কবিতা আদিত্য অনীকের মানবিক সম্পর্কের প্রতিফলন। এতে মিথ্যাচার, সম্পর্কের জটিলতা এবং জীবনের সাধারণ মুহূর্তগুলো কীভাবে বিশেষ হয়ে ওঠে, তা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।

লবণ দিয়ে চা খাওয়ার যে গল্প, তা এক ধরনের আদর্শ তৈরি করে যেখানে মিথ্যার মাঝে স্নেহ এবং সম্পর্কের গভীরতা লুকিয়ে থাকে। কবিতাটি মেয়েটির জীবন থেকে শুরু করে বুড়ির শেষ সময় পর্যন্ত সম্পর্কের একটি সুন্দর যাত্রা তুলে ধরে।

কবিতাটি মানুষের জীবনের মিথ্যা ও সত্যের মাঝখানে চলা, অনুভূতি, এবং সম্পর্কের মূল্য বোঝায়। এটি একটি গভীর মানবিক গল্প, যেখানে সময়ের সাথে মানুষের মনোভাব এবং অনুভূতি পরিবর্তিত হয়।

এই কবিতার মাধ্যমে, আমরা দেখতে পাই কীভাবে গণতন্ত্রের ধারণা বিপর্যস্ত হয়, বিশেষ করে একাধিক পক্ষ যখন তাদের নিজস্ব স্বার্থরক্ষা করতে একে অপরের প্রতি অবহেলা করে।

কবিতার ভাষা সরল হলেও তীক্ষ্ণ, যেখানে প্রতিটি পংক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সম্বন্ধে এক তীব্র প্রতিক্রিয়া। ‘গণতন্ত্র’ যে সমাজের অন্তর্নিহিত দুর্বলতা এবং অসঙ্গতি তুলে ধরে, তা আমাদের ভেবে দেখাতে বাধ্য করে।

এই কবিতা পাঠকদের মনে রাজনৈতিক সচেতনতা এবং দায়িত্বশীলতার বোধ জাগাতে সাহায্য করে। এটি শুধুমাত্র বাংলা সাহিত্যকেই সমৃদ্ধ করেছে, বরং বর্তমান পৃথিবীর রাজনৈতিক ও সামাজিক চিত্রের একটি গভীর মূল্যায়নও প্রদান করেছে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x