কবিতার খাতা
যারা আর ফিরবে না-ফরহাদ মাজহার
যারা আর ফিরবে না যমুনায় তাদের ছায়া ব্রিজের নীচে এসে আছড়ে পড়ে। এটা
আমাদের কারণেই ঘটে কারণ আমরাই দুই ভাগ বিভক্ত। কেউ চায় তারা ফিরে
আসুক, আর কেউ তাদের ভুলে যেতে পারলে বাঁচে। এ দ্বন্দ্বের খবর অবিভক্ত
যমুনার পানিও টের পায়। ব্রিজের তলে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলো ফিস ফিস করে,
তারপর নদীর ঢেউ হয়ে যে জলে তাদের জন্ম সেই জলেই বিলীন হয়ে যায়। নদীতে.
গলে যেতে তাদের মোটেও বেগ পেতে হয় না। বঙ্গোপসাগর থেকে এতো দূর
অবধি উজানে পাড়ি দিতে তারা পারে, কারণ সমুদ্রের লবন দিয়ে তাদের স্মৃতিগুলো
তৈরি। আর কে না জানে, লবণ গলে।
যমুনা কুঁকড়ে যায়, এর জন্য তার প্রস্তুতি নেই। এমনকি সে গতি পরিবর্তনের
সংকল্পও করে বসে। যাতে মৃতদের সে আবার বহন করে সাগরে নিতে পারে।
এতে ছায়াগুলো খুশি। গুম হয়ে যাওয়া লাশগুলো জাতীয় সংগীত গায় এবং
বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলে না।