কবিতার খাতা
মধুমাছি-রবিউল হুসাইন
মধুমাছি-রবিউল হুসাইন এখনো কথাগুলো মৌমাছি হয়ে ওড়ে প্রতিস্বরেআর অহেতুকী আগুনে তাদের পাখাদুটি পোড়েকী যে সেই…
জন্ম তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ১৯৪৩
জন্মস্থান: রতিডাঙ্গা গ্রাম, শৈলকুপা, ঝিনাইদহ, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু: ২৬ নভেম্বর ২০১৯
সমাধি: প্রযোজ্য নয়
রবিউল হুসাইন ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশি কবি, স্থপতি, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী। তিনি ১৯৬৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পেশাগত জীবনে স্থপতি হিসেবে কাজ করেন। তাঁর নকশায় নির্মিত উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও স্বাধীনতা তোরণ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক ও বিভিন্ন হল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম ও একাডেমিক ভবন কমপ্লেক্স।
কবিতায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘কী আছে এই অন্ধকারের গভীরে’, ‘আরও উনত্রিশটি চাঁদ’, ‘স্থিরবিন্দুর মোহন সংকট’, ‘কর্পূরের ডানাঅলা পাখি’, ‘আমগ্ন কাটাকুটি খেলা’, ‘বিষুবরেখা’, ‘দুর্দান্ত’, ‘অমনিবাস’, ‘কবিতাপুঞ্জ’, ‘স্বপ্নের সাহসী মানুষেরা’, ‘যে নদী রাত্রির’, ‘এইসব নীল অপমান’, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রবন্ধ’, ‘দুরন্ত কিশোর’, ‘বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘গল্পগাথা’, ‘ছড়িয়ে দিলাম ছড়াগুলি’।
তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০০৯) এবং একুশে পদক (২০১৮) সহ বিভিন্ন সম্মাননা লাভ করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে সমাজের প্রতি গভীর সচেতনতা, ভাষার নতুনত্ব এবং চিন্তার গভীরতা প্রতিফলিত হয়েছে, যা বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
মধুমাছি-রবিউল হুসাইন এখনো কথাগুলো মৌমাছি হয়ে ওড়ে প্রতিস্বরেআর অহেতুকী আগুনে তাদের পাখাদুটি পোড়েকী যে সেই…
পথে পথে-রবিউল হুসাইন বিধি আমার বামে থাকে বাস্তবতা ডানেসুখের ভেতর দুঃখ কষ্ট অনেকখানি টানে একটু…
এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট – রবিউল হুসাইন মানুষেরা নাকি এক সেকেন্ডে চার ফুট হাঁটতে পারে সাধারণত বারো কোটি মানুষ আমরাআমরা সবাই একসঙ্গে হাঁটলে মোট আটচল্লিশ কোটি ফুটঅর্থাৎ ষোল কোটি গজ, তার মানেএক সেকেন্ডে প্রায় নব্বই হাজার নয় শ দশ মাইলএগিয়ে যেতে পারি স্বাধীনতা পাওয়ার পর বিশ বছর পার হয়ে গেছেঅথচ আমরা সবাই একই জায়গায় একই বিন্দুতেদাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৌড়িয়ে মরছি সব সময়এক ইঞ্চিও অগ্রসর হতে পারছি না ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধুকে ভুলতে বসেছিজয় বাংলা নামক দীপ্র বজ্রনির্ঘোষ ভুলতে বসেছিসাতই মার্চের অতন্দ্র স্বাধীনতার ডাক ভুলতে বসেছিভাসানীর আস্সালামুআলাইকুম ভুলতে বসেছিপাকসেনা, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসদেরঅমানুষিক অত্যাচারের কথা ভুলতে বসেছিআমাদের মা-বোনদেরধর্ষিত হবার কথা ভুলতে বসেছি ‘প্রতিটি বাঙালি মেয়েকে গর্ভবতী করেখাঁটি পাকিস্তানি সন্তানের জন্ম দেব’ – শুয়োরের বাচ্চাদেরসেই রক্তে-আগুন-জ্বালানো সব কথা ভুলতে বসেছিআমরা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা ভুলে গেছিআমরা স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা ভুলে গেছি আসলে এতো ভুলোমন নিয়েস্বাধীনতা রক্ষা করা যায় না…