মিথ্যাবাদী মা- কবীর হুমায়ুন
ছোট্ট কালে হঠাৎ করে বাবা গেলেন মরে,
‘বাবা কোথায়?’ প্রশ্ন করি মায়ের গলা ধরে।
করুণ মুখে মা-জননী বলেন আদর করে,
‘ঐ আকাশের তারা হয়ে আছেন স্বর্গ-ঘরে।’
রাতের তারা দেখে দেখে রাত করেছি পার,
প্রিয় বাবার ছবিখানি পাইনি খুঁজে আর।
মিথ্যাবাদী মা-জননী কাঁদেন সারা রাত,
নিরব হয়ে চেয়ে থাকি গলায় রেখে হাত।
সন্ধ্যাকালে পড়ার সময় বলেন কোমল স্বরে,
‘লেখাপড়া করে যে জন, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে।
‘ লেখাপড়া করলাম মাগো পেলাম না তো গাড়ি,
লেখাপড়ার নেই প্রয়োজন করতে গাড়ি-বাড়ি।
একদিন এক সন্ধ্যাকালে হাতটি নিয়ে থাবায়,
বলেন আমায়, ‘যাচ্ছি চলে, ডাকছে তোরই বাবায়।’
চোখ ছল ছল বললো আমায় রেখে মাথায় হাত,
‘কাঁদিস না তুই আমার তরে, জাগিস না আর রাত।’
মিথ্যাবাদী মা যে আমার সে-ই যে গেলো চলে,
আমায় ফেলে একলা ঘরে আর কিছু না বলে।
মা-র বিদায়ে হৃদয় জ্বলে ঘুম আসে না চোখে,
নির্ঘুমতায় রাত কেটে যায় অশ্রু ঝরে শোকে।
মিথ্যাবাদী মায়ের লাগি’ থামে না কান্নারা,
বুকের ভেতর পাথর গলে ঝরে অশ্রুধারা।
আল্লাহ তোমায় সেজদা করে বলছি তুলে হাত,
‘মিথ্যাবাদী সকল মা-কে দানিও জান্নাত।’